আমরা বাঙালী
  • প্রারম্ভিকা
  • ' আমরা বাঙালী ' সম্পর্কে
    • কি ও কেন
    • আবির্ভাব
    • পরিচিতি
    • যাঁরা প্রাণ দিলেন
    • শ্রী প্রভাত রঞ্জন সরকার
    • দাবী
    • বর্তমান সমস্যা প্রসঙ্গে
  • বাঙলা
    • বাঙলার পরিচিতি
    • বাঙলার ভূখন্ডের ইতিকথা
    • বাঙলার সভ্যতার উন্মেষ
    • বাঙালী জাতির বয়স
  • বাংলা ভাষা
    • বাংলা ভাষা
    • বাংলা লিপি
    • বাংলা উচ্চারণ
    • বাংলা বর্ণমালা
    • বাংলা ভাষার মাধুর্য্য
    • ভাষা আন্দোলন
  • শোষিত ও বঞ্চিত বাঙলা
    • স্বাধীনোত্তর বাঙলা
    • উদ্বাস্তু পুনর্বাসন
    • লিংগুয়িষ্টিক কনˎভেনশন
    • ৫ জেলার বঙ্গভুক্তি নাকচ
    • গোর্খাল্যান্ডের দাবী
    • কামতাপুর আন্দোলন
    • অসম
    • ত্রিপুরা
    • ঝারখন্ড
    • বাংলা ভাষার অবমাননা
  • প্রাউট
    • প্রাউট কি ও কেন
    • প্রাউট -এর বৈশিষ্ট
    • পঞ্চ-মূল নীতি
    • অভিমত
  • প্রদর্শনী
    • পশ্চিমবঙ্গ
    • ঝাড়খণ্ড
    • ত্রিপুরা
আমরা বাঙালী
  • প্রারম্ভিকা
  • ' আমরা বাঙালী ' সম্পর্কে
  • বাঙলা
  • বাংলা ভাষা
  • শোষিত ও বঞ্চিত বাঙলা
  • প্রাউট
  • প্রদর্শনী

২১ শে ফেব্রুয়ারী ১৯৫২

  

           ১৯৫২ সালে বছরের শুরু থেকেই বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবীতে পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমানে যা বাংলাদেশ) ছাত্র-যুব-বুদ্ধিজীবীরা ব্যাপক আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তখনকার পাকিস্তান সরকার উর্দুকেই রাষ্ট্রভাষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তারই প্রতিবাদে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সর্বত্র ব্যাপক আন্দোলন গড়ে ওঠে।সংখ্যাতত্ত্বের বিচারে পাকিস্তানের উর্দুভাষী জনসংখ্যার চেয়ে বাংলাভাষী প্রায় দ্বিগুণ ছিল। তা সত্ত্বেও পাকিস্তান সরকারের জোর করে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন সারা বাঙলাদেশে ছড়িয়ে পড়ে ও ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী ছাত্ররা ধর্মঘট ডাকে। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ছিলেন মহঃ নুরুল আমিন। ওনার নির্দেশেই ডাকায় (ঢাকায়) ছাত্রদের ওপর উর্দুভাষী পুলিশেরা নির্বিচারে গুলি চালায়। যার ফলে ডাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচজন তরুণ ছাত্র সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুর কোলে লুটিয়ে পড়ে ও বহু মানুষ আহত হন। এই ঘটনার পর পাকিস্তান সরকার বাধ্য হয় পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা উর্দুর পরিবর্তে বাংলা করতে। আবুল বরকত, শফিউর রহমান, অবদুস সালাম, রফিকউদ্দিন আহমেদ ও আব্দুল জব্বর-এর আত্মবলিদান ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের লক্ষ লক্ষ বাঙালীর আন্দোলনে তাদের মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষা পায়।

          যেহেতু ওই শহীদেরা মাতৃভাষা রক্ষার জন্য আত্মবলিদান দিয়েছেন তাই ২১শে ফেব্রুয়ারী দিনটিকে রাষ্ট্রসংঘ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা রূপে স্বীকৃতি দিয়েছে। শুধু তাই নয়, রাষ্ট্রসংঘ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সুমধুর ভাষা হিসাবেও বাংলা ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

image3124

    ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারী-র ভাষা আন্দোলনে নিহতগণ ।

১৯শে মে ১৯৬১

  

          ১৯৬১ সালের ১৯শে মে অসমের শীলচরে বাংলা ভাষা আন্দোলনকারী সত্যাগ্রহীদের ওপর নির্মম ভাবে গুলি বর্ষিত হয়েছিল। তৎকালীন অসমের মুখ্যমন্ত্রী বিমলপ্রসাদ চালিহারের পুলিশ বাহিনীর দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিল আন্দোলনকারীরা। তাঁদের দাবী ছিল একটাই। অসমের বুকে বিষেশ করে কাছাড় জেলায় ৯০% মানুষের মুখের ভাষা বাংলা। বাংলা ভাষাতেই পঠন-পাঠন সরকারী কাজকর্ম সবই হত, সেখানে তাঁদের মুখের ভাষা কেড়ে অহমীয়া চাপিয়ে দেওয়ার সর্বপ্রকার প্রচেষ্টা বন্ধ করতে হবে। স্বাধীনতার পরে লক্ষ লক্ষ বাঙালী উদবাস্তু অসম প্রদেশে যাওয়ার পর কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের প্রতি সদয় না হয়ে রাজ্যসরকার দ্বারা উদবাস্তু ও ভূমিপুত্র বাঙালীদের উপর অত্যাচার চলাতে থাকে। তৎকালীন অসমের অর্থমন্ত্রী ফকিরুদ্দীন আলি আমেদ ৬০ দশকের শুরু থেকে অত্যাচারের ছক করতে থাকে। বাঙালী খেদাও অভিযানে তিনিই ছিলেন পরোক্ষ মদত দাতা। ১৯৬০ এর জুন মাসের শেষ থেকে অসমের বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয় শতাব্দীর বৃহত্তম বাঙাল খেদাও দাঙ্গা। তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার নামে মাত্র একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেই ক্ষান্ত হয়েছিলেন। বাংলা ভাষার ওপর ক্রমাগত আক্রমণের বিরুদ্ধে ‘কাছাড় সংগ্রাম পরিষদ’ আন্দোলন সংঘটিত করেছিল। সত্যাগ্রহী আন্দোলনের প্রথম দিনে সমগ্র কাছাড় জেলা সেনাবাহিনী দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছিল। ১৯৬১ সালের ১৯শে মে ( বাংলা ১৩৬৮ সালের ৫ই জ্যৈষ্ঠ ) শিলচরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি বর্ষণ হয়েছিল। রক্তে স্নাত হয়েছিল শিলচর  ষ্টেশন চত্বর। ওই স্থানে ৯ জনের প্রাণ গিয়েছিল ও ৪৪ জন গুরুতর জখম হয়েছিলেন। পরে দুজন হাসপাতালে প্রাণ হারান। ঘটনার কিছুদিন পর সিদ্ধার্তশংকর সহ বিভিন্ন আইনজীবীদের একটি প্রতিনিধি দল কাছাড় ঘুরে রিপোর্ট দেন নারী, বৃদ্ধ, শিশুদের ওপর পুলিশ যে অত্যাচার চালিয়েছে তা জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকান্ডকেও ম্লান করে দেয়। ঘটনার দিন জওহরলাল নেহেরু গুয়াহাটিতেই ছিলেন। শিলচরের ৯ জনের মৃত্যু সংবাদ পেয়েও অসমের মুখ্যমন্ত্রীকে তিরস্কার না ক’রে গুয়াহাটিতে একটি জনসভায় নামমাত্র দুঃখ প্রকাশ ক’রে বলেন- “ভাষা অধিকারের পথ সত্যাগ্রহ নয়”।


         ভারতের মাটিতে ভাষা আন্দোলনের এত বড় উদাহরণ আর নেই। ওই আন্দোলনে আন্মবলিদানকারীরা হলেন-


          ১)   কমলা ভট্টাচার্য               ২)   কানাইলাল নিয়োগী 

          ৩)  সূনীল সরকার                ৪)    সুকোমল পুরকায়স্থ

          ৫)   হীতেন বিশ্বাস                ৬)   তরণী দেবনাথ

          ৭)   শচীন্দ্র পাল                     ৮)   চন্ডীচরণ সূত্রধর 

         ৯)   কুমুদরঞ্জন দাশ              ১০)   সত্যেন্দ্র দেব

       ১১)    বীরেন্দ্র সূত্রধর


image3125

২১ শে জুলাই ১৯৮৬

১৯৮৬ সালে অসমের  তৎকালীন  মুখ্যমন্ত্রী  প্রফুল্ল  মহন্তের নেতৃত্বে  সারা অসমে এমনকি  বাঙালী প্রধান অঞ্চলেও অসমীয়া ভাষায় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করার  উদ্যোগে  এস.ই.বি.এ সারকুলার বার করা হয়। এরই প্রতিবাদে অসমের বাঙালীরা  আন্দোলন শুরু করে। ২১ শে জুলাই  মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল  মহন্ত করিমগঞ্জে আসেন ও সার্কিট হউসের সামনে তার উপস্থিতিতে বিভিন্ন বাঙালী সংগঠন ধর্ণায় বসে। ওই দিন এই সারকুলারের প্রতিবাদে ১২ ঘণ্টার বন্ধও পালিত হয়। সেই আন্দোলনকে প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে অসম পুলিশ করিমগঞ্জের সার্কিট হাউসের সামনে  অকারণে আন্দোলনকারীদের উপর প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি চালায় । এর ফলে নিজের মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্যে প্রান  দিলেন জগন্মোয় দেব (জগন) ও দিব্যেন্দু দাশ (যীশু) নামে দুই  বঙ্গসন্তান। জগন-যীশুর এই  আত্মবলিদান আরও একবার প্রমান করল বাঙালী জাতি তার মাতৃভাষার  মর্যাদা রক্ষায় বদ্ধপরিকর। এরপর পিছুহটতে বাধ্যহয় অসম সরকার। বাঙালীর মুখ থেকে মাতৃভাষা কেড়ে নেওয়ার অপচেষ্টা আরও একবার ব্যার্থ হয়।  

image3126

লেখস্বত্ব © ২০২০ আমরা  বাঙালী  - সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত।