আমরা বাঙালী
  • প্রারম্ভিকা
  • ' আমরা বাঙালী ' সম্পর্কে
    • কি ও কেন
    • আবির্ভাব
    • পরিচিতি
    • যাঁরা প্রাণ দিলেন
    • শ্রী প্রভাত রঞ্জন সরকার
    • দাবী
    • বর্তমান সমস্যা প্রসঙ্গে
  • বাঙলা
    • বাঙলার পরিচিতি
    • বাঙলার ভূখন্ডের ইতিকথা
    • বাঙলার সভ্যতার উন্মেষ
    • বাঙালী জাতির বয়স
  • বাংলা ভাষা
    • বাংলা ভাষা
    • বাংলা লিপি
    • বাংলা উচ্চারণ
    • বাংলা বর্ণমালা
    • বাংলা ভাষার মাধুর্য্য
    • ভাষা আন্দোলন
  • শোষিত ও বঞ্চিত বাঙলা
    • স্বাধীনোত্তর বাঙলা
    • উদ্বাস্তু পুনর্বাসন
    • লিংগুয়িষ্টিক কনˎভেনশন
    • ৫ জেলার বঙ্গভুক্তি নাকচ
    • গোর্খাল্যান্ডের দাবী
    • কামতাপুর আন্দোলন
    • অসম
    • ত্রিপুরা
    • ঝারখন্ড
    • বাংলা ভাষার অবমাননা
  • প্রাউট
    • প্রাউট কি ও কেন
    • প্রাউট -এর বৈশিষ্ট
    • পঞ্চ-মূল নীতি
    • অভিমত
  • প্রদর্শনী
    • পশ্চিমবঙ্গ
    • ঝাড়খণ্ড
    • ত্রিপুরা
আমরা বাঙালী
  • প্রারম্ভিকা
  • ' আমরা বাঙালী ' সম্পর্কে
  • বাঙলা
  • বাংলা ভাষা
  • শোষিত ও বঞ্চিত বাঙলা
  • প্রাউট
  • প্রদর্শনী

     বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ দার্শনিক শ্রী সরকার একাধারে ভাষাতাত্ত্বিক, সাহিত্যিক, সুরকার, গিতীকার, প্রত্নতাত্ত্বিক, পরিবেশবিদ, জৈব-মনস্তত্বের রূপকার, ঐতিহাসিক, ভূগোলবিদ, বৈঞ্জানিক, জ্যোতির্বিদ, অর্থনীতিবিদ- অর্থাৎ এককথায় জীবনের ও জীবনায়নের প্রতিটি অঙ্গের সঠিক পথিকৃৎ। ‘নব্যমানবতাবাদ’ ভিত্তিক শিক্ষাদর্শন, আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক দর্শন ‘প্রাউট’

     বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ দার্শনিক শ্রী সরকার একাধারে ভাষাতাত্ত্বিক, সাহিত্যিক, সুরকার, গিতীকার, প্রত্নতাত্ত্বিক, পরিবেশবিদ, জৈব-মনস্তত্বের রূপকার, ঐতিহাসিক, ভূগোলবিদ, বৈঞ্জানিক, জ্যোতির্বিদ, অর্থনীতিবিদ- অর্থাৎ এককথায় জীবনের ও জীবনায়নের প্রতিটি অঙ্গের সঠিক পথিকৃৎ। ‘নব্যমানবতাবাদ’ ভিত্তিক শিক্ষাদর্শন, আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক দর্শন ‘প্রাউট’ ও আধ্যাত্মিক দর্শন ‘আনন্দমার্গ’ এই তিনটি যুগান্তকারী কালজয়ী দর্শনও তাঁরই মস্তিষ্ক সঞ্জাত (‘আনন্দমার্গ’ দর্শন দিয়েই তিনি ক্ষান্ত হননি- এই দর্শন প্রচারের জন্য তিনি ‘আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘ’ নামে একটি সংঘটনও গড়েছেন। অধিকাংশ মানুষ তাঁকে তাই ধর্মগুরু ‘শ্রী শ্রী আনন্দমূর্তিজী’ নামেই চেনেন)। 


     শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার জন্মগ্রহণ করেন ১৯২১ সালের বৈশাখী পূর্নিমা বা বৌদ্ধ পূর্নিমা তিথিতে, বিহারের জামালপুরে। তাঁর পিতার নাম শ্রী লক্ষ্মীনারায়ণ সরকার ও মাতার নাম শ্রীমতী আভারাণী সরকার। যেহেতু শ্রী লক্ষ্মীনারায়ণ সরকার রেলেওয়ে অফিসে চাকুরি করতেন তাই তাঁকে কর্মসূত্রে জামালপুরে বসবাস করতে হয়েছিল, কিন্তু তাঁদের পৈতৃক বাসভূমি ছিল বর্দ্ধমান জেলার বামুনপাড়ায়। শ্রী লক্ষ্মীনারায়ণ সরকার ও শ্রীমতী আভারাণী সরকারের মোট আট পুত্র-কন্যার মধ্যে শ্রী প্রভাতরঞ্জন ছিলেন চতুর্থ সন্তান। 


     শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকারের শৈশব জীবন ও ছাত্র জীবনের প্রথম অধ্যায়টা কাটে জামালপুরেই। এরপর ১৯৩৯ সালে কৃতিত্বের সাথে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর ঐবছরেই কলিকাতায় বিদ্যাসাগর কলেজে সায়েন্স শাখায় ভর্ত্তি হন। এরই মধ্যে ১৯৩৬ সালে তাঁর পিতৃবিয়োগও ঘটে। ১৯৪১ সালে তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে আই.এস.সি. পাশ করেন ও তার কিছুদিন পরেই ফিরে আসেন জামালপুরে। জামালপুরে ফিরে সেপ্টেম্বর মাসে তিনি রেলের এ্যাকাউন্টস বিভাগে চাকুরীতে যোগ দেন।


      ১৯৫৫ সালে পয়লা জানুয়ারী তিনি ‘আনন্দমার্গ  

image2976

প্রচারক সংঘ’ নামে একটি আধ্যাত্ম ভিত্তিক সংঘটনের 

গোড়াপত্তন করেন- যা অল্প দিনের মধ্যেই সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ১৯৫৯ সালে যুগান্তকারী ‘প্রাউট’ দর্শনটি দেওয়া শুরু করেন। ১৯৬৩ সালে পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলায় তাঁর ধর্ম-সংঘের মূল   কেন্দ্র স্থাপিত করেন; নাম দেন ‘আনন্দনগর’।


     ইতিহাসের পাতা ওল্টালে দেখা যায় যখনই কেউ নোতুনের বার্তা নিয়ে মান

প্রচারক সংঘ’ নামে একটি আধ্যাত্ম ভিত্তিক সংঘটনের 

গোড়াপত্তন করেন- যা অল্প দিনের মধ্যেই সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ১৯৫৯ সালে যুগান্তকারী ‘প্রাউট’ দর্শনটি দেওয়া শুরু করেন। ১৯৬৩ সালে পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলায় তাঁর ধর্ম-সংঘের মূল   কেন্দ্র স্থাপিত করেন; নাম দেন ‘আনন্দনগর’।


     ইতিহাসের পাতা ওল্টালে দেখা যায় যখনই কেউ নোতুনের বার্তা নিয়ে মানব সভ্যতাকে ঊষার আলো দেখাতে চেয়েছে তখনই সেই বার্তাকে স্তব্ধ করতে হাজির হয়েছে দানবের আসুরি শক্তি। শ্রী প্রভাতরঞ্জনের ক্ষেত্রেও এর ব্যাতিক্রম ঘটেনি। ১৯৭১ সালে মিথ্যে ষড়যন্ত্র ক’রে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৯৭৩ সালের ১২ই ফেব্রুয়ারী পাটনার বাঁকীপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে তাঁকে হত্যা করার উদ্দেশ্য নিয়ে ওষুধের নামে বিষ প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু তিনি তাঁর আধ্যাত্মিক ক্ষমতার বলে সেই বিষ হজম করেন। এরই প্রতিবাদে ঐ বছরেই পয়লা এপ্রিল থেকে তিনি দৃষ্টান্ত সৃষ্টিকারি অনশন শুরু করেন-যা তিনি ৫ বছর ৪ মাস ১ দিন চালান। এরপর ১৯৭৮ সালে ভারত সরকার চাপে পড়ে বিচার শুরু করেন ও পাটনা হাইকোর্টের রায়ে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হন। 

     কারাগার থেকে প্রত্যাবর্তনের পর তাঁর কাজের গতিকে তিনি আরও ত্বরান্বিত করেন। ১৯৮২ সালে আর এক যুগান্তকারী দর্শন দেন-যার নাম ‘নব্যমানবতাবাদ’। এই বছরেই ১৪ই সেপ্টেম্বর থেকে তিনি সঙ্গীত রচনায় মনোনিবেশ করেন ও জীবনের অন্তীম দিন পর্যন্ত তা চালিয়ে যান। তাঁর মোট রচিত গানের সংখ্যা ৫০১৮ টি। যার প্রত্যেকটির সুরও তিনি নিজেই দিয়ে যান। এই গানগুলির ভাষা

     কারাগার থেকে প্রত্যাবর্তনের পর তাঁর কাজের গতিকে তিনি আরও ত্বরান্বিত করেন। ১৯৮২ সালে আর এক যুগান্তকারী দর্শন দেন-যার নাম ‘নব্যমানবতাবাদ’। এই বছরেই ১৪ই সেপ্টেম্বর থেকে তিনি সঙ্গীত রচনায় মনোনিবেশ করেন ও জীবনের অন্তীম দিন পর্যন্ত তা চালিয়ে যান। তাঁর মোট রচিত গানের সংখ্যা ৫০১৮ টি। যার প্রত্যেকটির সুরও তিনি নিজেই দিয়ে যান। এই গানগুলির ভাষা প্রধানত বাংলা হলেও তিনি ইংরাজী, হিন্দী, উর্দু, সংস্কৃত ইত্যাদি ভাষাতেও রচনা করেন। তাঁর ব্যাস্ত কর্ম জীবনের মধ্যে তিনি গান ছাড়া বিভিন্ন দিক নিয়ে বিভিন্ন বইও রচনা করেন।


     তাঁর জীবনের সকল কর্ম কান্ডের বিশেষ বিশিষ্টই ছিল পৃথিবীর সমগ্র মানব জাতিকে তার চরম ও পরম লক্ষের পানে এগিয়ে দেওয়া। কিন্তু তবুও তাঁর ব্যষ্টিগত জীবনে বাঙালীয়ানার ছাপ ছিল লক্ষ করার মত। তিনি চেয়েছেন সমাজ আন্দোলনের এই সর্বাত্মক বিপ্লবে বাঙালীরাই নেতৃত্ব প্রদান করুক। ইতিহাসের বিশ্লেষণ ক’রে তিনি দেখিয়েছেন সমাজের প্রতিটি সংকটময় মুহুর্তে বাঙালীরাই পরিত্রাণের পথ দেখিয়েছেন। উদার-সর্বভৌম-বিশ্বজনীন মানসিকতার সর্বোৎকৃষ্ট প্রতিফলন ঘটেছে এই বাঙালীদের মধ্যেই। পৃথিবীর তিন  বৃহত্তর নদী সভ্যতা- গাঙ্গেয়, ব্রহ্মপুত্র ও রাঢ়ীয় সভ্যতার ব-দ্বীপীয়স্তর বা মিলন ক্ষেত্র হল এই বাঙলা। ফলে আর্য, মঙ্গোল ও প্রাচীন দ্রাবীড় গোষ্ঠীর রক্ত সংমিশ্রনে সর্বোৎকৃষ্ট মেধাসম্পন্ন জাতিতে যেমন উত্তরণ ঘটেছে বাঙালীর, তেমনি সর্ববর্ণের সমন্বয় ঘটেছে তার রক্তে- তাই বাঙালী উদার ও বিশ্বজনীন মনের অধিকারী। 


     মানব জীবনের এমন কোন দিক নেই যেটাকে তিনি উপেক্ষা করেছেন। মানব জাতির সর্ব ক্ষেত্রের সর্ব স্তরে নবজাগরণ ঘটানোর যথেষ্ট উপাদান তিনি দিয়েগেছেন তাঁর নিরলস কর্মতৎপরতায়। ১৯৬৬ সালে শ্রী সরকার তাঁর চাকুরী ত্যাগ করেন ও সেই থেকে ১৯৯০ সালের ২১ অক্টো্বর- তাঁর জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত পুরো সময় তিনি আন্মনিয়োগ করেন জগতবাসীর কল্যাণ কার্যে। 

লেখস্বত্ব © ২০২০ আমরা  বাঙালী  - সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত।