আমরা বাঙালী
  • প্রারম্ভিকা
  • ' আমরা বাঙালী ' সম্পর্কে
    • কি ও কেন
    • আবির্ভাব
    • পরিচিতি
    • যাঁরা প্রাণ দিলেন
    • শ্রী প্রভাত রঞ্জন সরকার
    • দাবী
    • বর্তমান সমস্যা প্রসঙ্গে
  • বাঙলা
    • বাঙলার পরিচিতি
    • বাঙলার ভূখন্ডের ইতিকথা
    • বাঙলার সভ্যতার উন্মেষ
    • বাঙালী জাতির বয়স
  • বাংলা ভাষা
    • বাংলা ভাষা
    • বাংলা লিপি
    • বাংলা উচ্চারণ
    • বাংলা বর্ণমালা
    • বাংলা ভাষার মাধুর্য্য
    • ভাষা আন্দোলন
  • শোষিত ও বঞ্চিত বাঙলা
    • স্বাধীনোত্তর বাঙলা
    • উদ্বাস্তু পুনর্বাসন
    • লিংগুয়িষ্টিক কনˎভেনশন
    • ৫ জেলার বঙ্গভুক্তি নাকচ
    • গোর্খাল্যান্ডের দাবী
    • কামতাপুর আন্দোলন
    • অসম
    • ত্রিপুরা
    • ঝারখন্ড
    • বাংলা ভাষার অবমাননা
  • প্রাউট
    • প্রাউট কি ও কেন
    • প্রাউট -এর বৈশিষ্ট
    • পঞ্চ-মূল নীতি
    • অভিমত
  • প্রদর্শনী
    • পশ্চিমবঙ্গ
    • ঝাড়খণ্ড
    • ত্রিপুরা
আমরা বাঙালী
  • প্রারম্ভিকা
  • ' আমরা বাঙালী ' সম্পর্কে
  • বাঙলা
  • বাংলা ভাষা
  • শোষিত ও বঞ্চিত বাঙলা
  • প্রাউট
  • প্রদর্শনী

'প্রাউট ' কি

      ' প্রাউট ' -একটি নোতুন সমাজিক-অর্থনৈতক-আধ্যাত্মিক দর্শন-যার প্রবক্তা মহান দার্শনিক শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার। প্রকৃতপক্ষে বর্তমান সমাজের সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাষ্ট্রনৈতিক, শিক্ষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক তথা সমস্ত প্রকার সমস্যারই সমাধান রয়েছে এই নোতুন যুগান্তকারী সমাজ দর্শনে। ১৯৫৯ সাল থেকে শ্রী সরকার এই দর্শনটি দেওয়া শুরু করেন।


     ‘প্রাউট’ (PROUT) শব্দটি Progressive Utilisation Theory-র সংক্ষিপ্ত রূপ। Pro= Progressive, U=Utilisation, T=Theory. বাংলায় যা হবে ‘প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্ব’। যেহেতু প্রাউট বিশ্বের সমস্ত মানুষের কল্যাণের জন্য তাই বর্তমান পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে ইংরাজীতেই এই তত্ত্বের নামকরণ করা হয়েছে। এই প্রাউটের নামকরণের মধ্যে আমরা যে শব্দগুলি পাই সেগুলি হল- প্রগতিশীল (Progressive) ও উপযোগ (Utilisation)। এখন ‘প্রগতিশীল’ শব্দের মধ্যে ‘প্রগতি’ কথাটির মানে ‘প্রকৃষ্ট গতি’, অর্থাৎ যে গতি শুভের পথে চালিত। দ্বিতীয়ত- কোন’ দ্রব্যের  দ্বারা অভাব মোচনকে বলা হয় ‘উপযোগ’। আর এই অভাব যার দ্বারা মিটতে পারে সেই দ্রব্য-ই হ’ল সম্পদ।


     আমাদের এই পৃথিবী নানান সম্পদে পরিপূর্ণ। মানুষের সৃষ্টির পূর্বেই মানুষের অভাব পূরণের জন্য অজস্র সম্পদ পৃথিবীতে সাজান রয়েছে। তবুও মানুষের অভাবের শেষ নেই। কারণ ঈশ্বরের দেওয়া অজস্র সম্পদের যথাযথ উপযোগ গ্রহণ করা হচ্ছে না। তাই, কীভাবে মানুষ সম্পদের যথাযথ উপযোগের মাধ্যমে তার সমূহ সমস্যার সমাধান করবে, তার মূল নীতি এখানে ব্যক্ত করা হয়েছে। পৃথিবীর সম্পদের যথাযথ উপযোগের এই নীতির স্বভাব হবে স্থান-কাল-পাত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সবসময় প্রগতির পথে বা শুভের পথে এগিয়ে চলা। তাই এই নীতির বা দর্শনের বা তত্ত্বের নামকরণ করা হয়েছে 'প্রাউট' বা প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্ব।

image3332

প্রাউট কেন

        “একটা মানুষ অন্যের মুখের গ্রাস কেড়ে নেবে- এটা তো উচিৎ নয়। সুতরাং মানুষ যাতে একটি বিধিসম্মতভাবে তার সমস্ত সম্পদ নিজেদের মধ্যে মিলে মিশে ভাগ ক’রে কাজে লাগাতে পারে তার একটা ব্যবস্থার দরকার ছিল- যা এর আগে কোনো মহাপুরুষ করেননি অথবা হয়তো তারকব্রহ্মও এর আগে করেননি। এই না করার জন্যে সমাজ জীবনে যে অনুপপত্তি থেকে গিয়েছিল, সেই অনুপপত্তি জন্যেই মানুষের যত দুঃখ-কষ্টভোগ চলছিল। যাতে এটা না হয়- যাতে মানুষ মহত্তর লক্ষকে চোখের সামনে রেখে জাগতিক দুঃখ-ক্লেশগুলোকে দূর করবার চেষ্টা করে; সেই জন্যেই প্রাউট দর্শনের সৃষ্টি হয়েছে। প্রাউট দর্শনকে সৃষ্টি করা ছাড়া অন্য কোন পথ ছিল না। তা যদি না করা হত আরো হয়তো শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মানুষের দুঃখ-কষ্ট-ক্লেশ চলতেই থাকত ও সুবিধাবাদী নীচাশয় ব্যষ্টিরা সহজ সরল মানুষের বৌদ্ধিক সরলতার অথবা বৌদ্ধিক অভাবের সুযোগ নিয়ে তাঁদের শোষণ করতো।…এখন পৃথিবীর সমস্ত মানুষকে এই নিপীড়ন, এই দমন ও শোষণ থেকে বাঁচাতেই হবে- যেন তেন প্রকারেণ।”

                                  

                                                                                                                                                        --  শ্রী প্রভাতরঞ্জন  সরকার

image3333

       প্রতিটি বস্তুকে শনাক্ত করা হয় তার ধর্ম দেখে। যেমন কোন বস্তু কে আগুনের মত দেখতে হলেও যদি সেই বস্তুটির পোড়ানোর ক্ষমতা না থাকে তবে তাকে আগুন বলতে পারি না।ঠিক এমন ধর্ম বা Characteristics  শুধু জড় বস্তুর নয় জীবেরও আছে, এমনকি মানুষেরও আছে। আর মানুষের সেই ধর্মের একটি হ’ল সীমাহীন চাহিদা। মানুষের মনের একটি চাওয়া যখন পাওয়াতে রূপান্তরিত হয় তখন আর একটি নতুন চাওয়ার জন্ম হয়। আমাদের পৃথিবীর সকল সম্পদই সীমিত। তাই মানুষ যদি তার অন্তহীন এই চাহিদাকে সীমিত পার্থিব সম্পদের মধ্যে মেটাতে চেষ্টা করে তবে ব্যার্থ তো হবেই, পরিবর্তে জুটবে দুঃখ আর ক্লেশ। এই অনন্ত চাহিদা মিটতে পারে একমাত্র সীমাহীন কোন সম্পদ দিয়েই। আর তাই অনন্ত-অসীম ঈশ্বরের সাধনার মাধ্যমে ঈশ্বর প্রাপ্তিই এর একমাত্র সমাধান। প্রাউট প্রবক্তা তাঁর উপরিউক্ত উক্তিতে একেই ‘মহত্তর লক্ষ’ বলেছেন। 

          শ্রী সরকার লক্ষ করেছেন এই ঈশ্বর সাধনা করতে হ’লে মানুষের আগে জাগতিক প্রয়োজন মেটাতে হবে । কারণ খালি পেটে ঈশ্বর সাধনা হয়না। তিনি এও লক্ষ করছেন- এই জাগতিক প্রয়োজন মেটার ক্ষেত্রে দুটি প্রধান বাধা হচ্ছে ;  প্রথমত- জাগতিক সম্পদের যথাযথ সর্বাধিক উপযোগের কৌশলের  অভাব  আর দ্বিতীয়ত-

image3334

সুবিধাবাদী লোভী মানুষের শোষণ । যে শোষণ পৃথিবীর অধিকাংশ  সম্পদকেই অতিঅল্পসংখ্যক মানুষের হাতে কুক্ষিগত করেছে; বঞ্চিত হয়েছে মানুষের একটি বড় অংশ। এমনকি এই শোষণই প্রকৃতিকে আহতও করেছে বার বার। সম্প্রতি দারিদ্র বিরোধী এক এন.জি.ও ‘অক্সফ্যাম’-এর ২০১০ সালের এক রিপোর্টে প্রকাশ- পৃথিবীর মাত্র ১% মানুষের কাছে আছে পৃথিবীর ৪৮% সম্পদ। ওই পত্রিকারই হিসেব, ২০১৬ তে তাঁদের হাতে পৃথিবীর ৫০% বেশী সম্পদ এসে যাবে। বোঝাই যাচ্ছে সারা পৃথিবী জুড়ে অর্থনৈতিক শোষণের কি ভয়াবহ রূপ। তিল তিল ক’রে জনসাধারণের ধন কেড়ে নিয়েই না পুঁজিপতিরা তাদের পুঁজির পাহাড় জমিয়েছে। কেবলমাত্র পুঁজিবাদ নয়, মার্ক্সবাদও একশ বছর ধরে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ব্যার্থ হয়েছে। জন্ম দিয়েছে রাষ্ট্রীয় পুঁজিবাদের। এরপর এসেছে মিশ্র অর্থনীতি। সেও হয়েছে ব্যার্থ।

       এমতাবস্থায় মহান দার্শনিক ঋষি শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার এক যুগান্তকারী সামাজিক -অর্থনৈতিক দর্শন ‘প্রাউট’ দিলেন। পৃথিবীতে প্রথম এমন একটা দর্শন যার ভিত্তি হ’ল আধ্যাত্মিকতা। এ দর্শন শুধুমাত্র মানব জাতির কল্যাণের জন্যই নয়, পৃথিবীতে মানুষের পরেও সকল প্রকার প্রাণীন-অপ্রাণীন সত্তার প্রকৃত মুক্তির পথ উন্মুক্ত করতেই এর আবির্ভাব।  

"আমি চাই প্রতিটি মানুষ জীবনের নূন্যতম প্রয়োজন-পূর্ত্তির গ্যারেন্টি পাক। প্রতিটি মানুষ তার মানসিক ক্ষেত্রের সমস্ত সম্ভবনার পূর্ণ সুযোগ পাক। প্রতিটি মানুষ শাশ্বত সত্য উপলবদ্ধির সমান সু্যোগ পাক, ও বিশ্বের সকল উৎকর্ষ ও গৌরবের অধিকারী হোক। প্রতিটি মানুষ সেই শাশ্বত অনন্ত সত্তার দিকে এগিয়ে চলুক।"

                                                 

                                                                                              --  শ্রী প্রভাতরঞ্জন  সরকার 

লেখস্বত্ব © ২০২০ আমরা  বাঙালী  - সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত।