হিন্দী সাম্রাজ্যবাদী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ প্রশ্রয় তথা মদতে, বিগত প্রায় দুই দশক ধরে উত্তরবঙ্গে তথা অসমের বাংলা ভাষা-ভাষী জেলাগুলিতে, পৃথক কামতাপুর রাজ্যের আন্দোলন তীব্র হয়েছে। প্রস্তাবিত কামতাপুর রাজ্যের জন্য আন্দোলনকারীরা দাবী করছে-
১) পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাংশের কোচবিহার জেলা, আলিপুরদুয়ার জেলা, জলপাইগুড়ি জেলা, দার্জিলিং জেলা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা ও মালদা জেলা।
২) অসমের গোয়ালপাড়া জেলা, ধুবড়ী জেলা, বঙ্গাইগাঁও জেলা, কোকড়াঝাড় জেলা।
৩) বিহারের কিষাণগঞ্জ জেলা।
৪) নেপালের ঝাঁপা জেলা।
আন্দোলনকারীরা ‘কামতাপুরী’ নামক ভাষার সরকারি স্বীকৃতিও দাবী করছে। প্রকৃতপক্ষে উপরিভুক্ত (১) ও (৪) নং ক্রমিকে উল্লেখিত সমূহ এলাকা বাঙলার নিজস্ব মাটি; আর ‘কামতাপুরী’ স্বতন্ত্র কোন ভাষাও নয়। ‘রংপুরী বাংলা’ উপভাষার একটি উন্নত বুলি বা খণ্ড উপভাষা। বিগত ২১শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭-তে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী, ‘কামতাপুরী/রাজবংশী’ ভাষাকে সরকারী স্বীকৃতি দেবার ঘোষণা করেছেন। এই সরকারী স্বীকৃতির ফলে—
ক) বাংলা ভাষা কয়েক লক্ষ বাঙালীকে সরকারী ভাবে হারিয়ে, দেশের দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ ভাষা থাকবে না।
খ) ক্ষুদ্রাকৃতি পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ২০,৬৬১ বর্গ কি.মি. এলাকা নিয়ে স্বতন্ত্র কামতাপুর রাজ্য ঘটন একপ্রকার অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠবে; কারণ, ‘কামতাপুরী / রাজবংশী’ ভাষার দাবী, আর পৃথক কামতাপুর রাজ্যের দাবী সমার্থক।
গ) বাংলা ভাষা বহুমুখী অবদমন-অবনমন-শোষণের শিকার হবে।
ঘ) ভারতবর্ষের মানচিত্র থেকে ঐতিহাসিক বাঙলা-র নাম মুছে যাবার পথে এগিয়ে যাবে পশ্চিমবঙ্গ।
ঙ) পশ্চিমবঙ্গের অন্য জাত-বাঙালীরা উৎসাহিত হয়ে, বাংলার কোন বুলি বা খণ্ড-উপভাষাকে প্রথমে স্বতন্ত্র ভাষার দাবী ও পরে আলাদা রাজ্যের দাবী জানাতে পারে।
লেখস্বত্ব © ২০২০ আমরা বাঙালী - সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত।