আমরা বাঙালী
  • প্রারম্ভিকা
  • ' আমরা বাঙালী ' সম্পর্কে
    • কি ও কেন
    • আবির্ভাব
    • পরিচিতি
    • যাঁরা প্রাণ দিলেন
    • শ্রী প্রভাত রঞ্জন সরকার
    • দাবী
    • বর্তমান সমস্যা প্রসঙ্গে
  • বাঙলা
    • বাঙলার পরিচিতি
    • বাঙলার ভূখন্ডের ইতিকথা
    • বাঙলার সভ্যতার উন্মেষ
    • বাঙালী জাতির বয়স
  • বাংলা ভাষা
    • বাংলা ভাষা
    • বাংলা লিপি
    • বাংলা উচ্চারণ
    • বাংলা বর্ণমালা
    • বাংলা ভাষার মাধুর্য্য
    • ভাষা আন্দোলন
  • শোষিত ও বঞ্চিত বাঙলা
    • স্বাধীনোত্তর বাঙলা
    • উদ্বাস্তু পুনর্বাসন
    • লিংগুয়িষ্টিক কনˎভেনশন
    • ৫ জেলার বঙ্গভুক্তি নাকচ
    • গোর্খাল্যান্ডের দাবী
    • কামতাপুর আন্দোলন
    • অসম
    • ত্রিপুরা
    • ঝারখন্ড
    • বাংলা ভাষার অবমাননা
  • প্রাউট
    • প্রাউট কি ও কেন
    • প্রাউট -এর বৈশিষ্ট
    • পঞ্চ-মূল নীতি
    • অভিমত
  • প্রদর্শনী
    • পশ্চিমবঙ্গ
    • ঝাড়খণ্ড
    • ত্রিপুরা
আমরা বাঙালী
  • প্রারম্ভিকা
  • ' আমরা বাঙালী ' সম্পর্কে
  • বাঙলা
  • বাংলা ভাষা
  • শোষিত ও বঞ্চিত বাঙলা
  • প্রাউট
  • প্রদর্শনী

অসম

     ১৯৩১ সালের ব্রিটিশাধীন ভারতের জনগণনা অনুযায়ী অসম রাজ্যে অসমীয়া-ভাষী ও বাংলা-ভাষীর সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১৯,৮২,৫১৬ জন ও ১৯,৫৪,০৩৫ জন (১৯৪৭ সালে পূর্ব-পাকিস্তান অর্থাৎ পূর্ব বাঙলার সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত শ্রীহট্ট জেলার কুড়ি লক্ষ জন বাদে)। স্বাধীন ভারত সরকার পরিচালিত ১৯৫১ সালে জনগণনায় অসমীয়া ভাষীর সংখ্যা ৪৯,১৩,৯২৯ জন (১৫০% বৃদ্ধি), অথচ বাংলা-ভাষীর সংখ্যা ১৪,৪৭,০০০ জন (২৫% হ্রাস)। আবার ১৯৭১ সালের জনগণনায় একই ভাবে অসমীয়া ও বাংলা-ভাষীর সংখ্যা দাঁড়ায় যথাক্রমে ৮৯,০৪,৯১৭ জন ও ২৮,৮০,০০০ জন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর প্রচুর উদ্বাস্তু অসমে আসা ও স্বাভাবিক জনসংখ্যা বৃদ্ধি হওয়া সত্ত্বেও গণিত শাস্ত্রের কোন ম্যাজিকে ১৯৫১ সালে অসমে বাংলা-ভাষীর সংখ্যা ১৯৩১ সালের তুলনায় ২৫% হ্রাস পেল? এ কোন ম্যাজিক নয়, একমাত্র ছল-চাতুরি, মিথ্যা ও বিশ্বাসঘাতকতার আশ্র্য় নিয়েই সম্ভব। আর হয়েছেও তাই।

     ১৯৫১ সালের জনগণনায়, জাতীয় কংগ্রেস পরিচালিত কেন্দ্র ও অসমের রাজ্য সরকারের ষড়যন্ত্রে, কম করেও ২৫ লক্ষ বাঙালীকে অসমীয়া-ভাষী দেখিয়ে নথিপত্রে কারচুপি করা হয়েছে। ফলে অসমীয়া-ভাষীদের সংখ্যা বৃদ্ধি তথা সংখ্যা গরিষ্ঠতা সম্ভব হ’ল। ১৯৭১ সালে একই উপায়ে সরকারী নথিপত্রে অসমীয়া ভাষীদের গরীষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও, ১৯৭১ থেকে ‘আসু’-র নেতৃত্বে হিংসাত্বক বাঙালী-বিতাড়ণ আন্দোলন শুরু হয়; হাজার হাজার বাঙালী খুন হয়।


     ১৯৫৮ সালে প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর নেতৃত্বে, কেন্দ্রীয় ও অসম রাজ্যের সরকার তথা ‘আসু’-র মধ্যে ‘অসম চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়; অসমের জন্য নাগরিকত্ব আইনে বিশেষ সংশোধন করা হয়। সেইমত বহু ঘটনার মধ্য দিয়ে অসম চুক্তি কার্যকর করা শুরু হয়। জাতীয় নাগরিক পঞ্জী (এন.আর.সি) অদ্যতন করা চলছে- ফরেনার্স ট্রাইবুনাল অ্যাক্ট ১৯৪৬ ও সংশ্লিষ্ট নিয়মাবলী ১৯৬৪ অনুযায়ী বাঙালীদের বিদেশী হিসাবে চিহ্নিত করার পরিকল্পিত নাটক চলছে অসমে।


     ‘অসম সাহিত্য সভা’-র সোৎসাহ অনুপ্রেরণায় বাঙালী-বিদ্বেষী হিন্দী সম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠীর প্রচ্ছন্ন মদত ও আসুর নেতৃত্বে উগ্র ‘অসমীয়া জাতীয়তাবাদী’-রা পরিকল্পিত বিদেশী বিতাড়নের নামে প্রায় ৪০ লক্ষ বাঙালীকে অসম থেকে উচ্ছেদ করার লক্ষে এগিয়ে চলেছে। অসম প্রশাসন ও পুলিশ এ কাজে নির্লজ্জ ভুমিকা নিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বাঙালীদের আশ্চর্য রকম নীরবতা, বিভিন্ন রাজ্যে বাঙালী নির্যাতনকারীদের সাহস বৃদ্ধিতে সহায়ক হচ্ছে। সম্প্রতি বাঙালী-বিদ্বেষী অসম সরকার নতুন কয়েক হাজার বাঙালীকে বিদেশী সন্দেহে ট্রাইবুন্যাল নোটিশ ধরিয়েছে; যদিও অসমে চালু ৩৬টি ট্রাইবুনালে ৫ই জানুয়ারী ২০১৩ পর্যন্ত প্রায়, ২,৩৭,৬৩১ টি কেস জমে রয়েছে। মায়ানমারের ইউনান প্রদেশের ‘তাই’ নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী উদ্ভূত অহোম জাতির ৯০০০ মানুষ (অধিকাংশ পুরুষ) ১৯২৮ খ্রীষ্টাব্দে অসমে বসতি স্থাপন করে। সেই অহোমদেরই উগ্র অসমীয়া জাতীয়তাবাদী দাদাগিরির অত্যাচারে এক-এক ক’রে পার্বত্য উপজাতী জনগোষ্ঠী অসম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নাগাল্যান্ড, মেঘালয়, মিজোরাম, অরুনাচল প্রদেশের জন্ম দিয়েছে। খন্ডিত অসমের ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার প্রকৃত বাঙালী মুসলমানেরা যদি ‘অহোম ভীতি’ কাটিয়ে জনগণনায় তাঁদের মাতৃভাষা বাংলাকে নথিভুক্ত করেন তাহলে অহোমদের দাদাগিরি চলবে না-এই ভবিষৎ ভীতির কারণে অসমীয়ারা বাঙালী বিতাড়নের ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে; আর উগ্র অসমীয়া জাতীয়তাবাদীদের প্রতিভু, স্বাধীন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারে আসীন দুই বৃহৎ রাজনৈতিক দল বাঙলাকে খন্ড-বিখন্ড ক’রে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারে বাঙালীর প্রতিনিধিত্ব খর্ব ক’রে বাঙলার সম্পদ লুন্ঠন করছে।

লেখস্বত্ব © ২০২০ আমরা  বাঙালী  - সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত।